আবদুল লতিফ জনি:
ঢাকায় কেনো থাকছি ঢাকা চলছে ঘোড়া-গাড়ী- –
অলিগলি পথের ধারে গড়ছি সুখের বাড়ী।
কেউবা থাকে নিজের ঘরে কেউবা দিয়ে ভাড়া–
কেউবা কাটায় পথের পাশে কেউবা ছন্নছাড়া।
দিনে দিনে বাড়ছে মানুষ নগর সীমানা- –
কেউবা আশার প্রদীপ জালায় খুঁজতে ঠিকানা।
শীতলক্ষা, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু নদী- –
হাজার বছর ঢাকার প্রেমে বইছে নীরবধি।
সদর ঘাটে পসরা সাজায় বসে বনিক দল- –
কেউবা বিকায় সোনা-দানা কেউবা নানান ফল।
নবাবপুরে নাই যে নবাব ঝিগাতলায় ঝিল- –
মতিঝিলে শূন্য মতি নীল কুঠিতে নীল।
ভূতের গলির ভূতের রাজা রামপুরাতে থাকে- –
কাঁঠাল বাগান,উত্তরাতে ঝিঁঝি পোকায় ডাকে।
ধোলাই খালে ধৌত কর্ম অনেক আগেই ইতি- –
শায়েস্তা খানের লালবাগে আজ মোঘল রাজের স্মৃতি।
মোঘল টুলি মোঘল সেনার থামলো হাঁকের ডাক- –
মগবাজারের মঘী নারী ভাঙছে মৌয়ের চাক।
আফগানী আর তুর্কী সেনার পাঠানতুলিতে বাসা- –
করবে শোসন গড়বে শাসন এইতো তাদের আশা।
ধানমন্ডিতে ধানের মাড়াই ইতিহাসের পাতায়- –
মীরপুরে সেই মীরের বাড়ী ঘুরছে স্মৃতির খাতায়।
তল্লাবাগের বাগান খালি কলাবাগানে কলা–
যাত্রাবাড়ীর যাত্রা দলে ফাটায় গানের গলা।
হাতীর ঝিলে হাতীর পালের দেখা মিলা ভার–
আহছানউল্লার নবাব মন্জিল করছে হাহাকার।
তোপখানাতে তোপের ঘরে উড়ছে বাদুরছানা-
পরিবাগে নীদমহলে ঢুকতে সবার মানা।
ঢাকেশ্বরী কালী মন্দির শাখের বাদ্য বাজায়-
মসজিদ, মন্দির, গীর্জা সবি আপন ধর্মে সাজায়।
মালিবাগে ঘুরছে মালী করছে পরিস্কার – –
কাঁটাবনের বিদ্যালয়টি নুতন আবিস্কার।
রমনাতে আর হয়না কভু ঘোড়ার দৌড়ের খেলা–শান্তিবাগের অশান্তি আজ নগরবাসীর জ্বালা।
তেজগাঁও-এর তেজ হারিয়ে মরছে ধূকে ধূকে–
কুর্মিটোলায় বিমান উড়ে নীল আকাশের বুকে।
পোস্তা খোলার পোস্তাদানা ধুপখোলাতে ধুপ- –
আজিমপুরে খুড়ছে কবর সবার মৃত্যুকুপ।
জমের ঢাকার চলছে চাকা কামরাঙ্গিনীর চরে- –
শসান ঘাটে পুড়ছে দেহ নিভছে জীবন তরে।
অলি-গলি মাঠ পেরিয়ে ভরছে তেপান্তর- –
সারি -সারি দালানকোঠা আকাশ ছোয়া ঘর।
কেউবা করে ধান্ধা ফিকির কেউবা উড়ায় ফানুস–
এই নগরে বসত করে নানা রংয়ের মানুষ।
কেউবা করে রাজ্য শাসন কেউবা করে চুরি–
হাজার বর্ষের এই নগরে চলছে ভূরি ভূরি।
এমনি করে দিন কেটে যায় বছর কেটে শেষ- –
ঢাকার নীচে থাকছি ঢাকা এই আমাদের দেশ।
ঢাকা- -০৬/০৬/২০১৬.
মন্তব্য করুন