ইব্রাহিম খলিল, নরসিংদী :নরসিংদীর রায়পুরায় বিয়ে বাড়ীতে দাওয়াত দেয়া নিয়ে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ইউপি নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৩ মে) দুপুর থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উপজেলার চরআড়ালিয়া ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মাসুদা জামান ও নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী সজিব সরকারের সমর্থকদের মধ্যে এ সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সহিংসতার ঘটনায় টেটা বিদ্ধসহ উভয় পক্ষের ১০/১২ জন আহত হয়।
এসময় চরআড়ালিয়া ইউনিয়নের সজীব সরকারের সমর্থকরা বাঘাইকান্দি গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ী-ঘরে আগুন দেয় এবং গরুসহ মালামাল লুটপাট করা হয়।
আহতদের মধ্যে তাদের নাম জানা গেছে তারা হলেন, বাঘাইকান্দি গ্রামের বোরহান মিয়া ছেলে আবু কালাম (৪৪) ও কেরামত আলীর ছেলে বাহার উদ্দীন (৬০), রফিক মিয়ার স্ত্রী সুফিয়া (২০), সুরুজ মিয়ার ছেলে আ. বাতেন (৪০)।
জানা যায়, চরআড়ালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদা জামান ও তার স্বামী সাবেক চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান সরকারকে এলাকার একটি বাড়ীতে বিয়ের দাওয়াত দেয়। ওই বিয়ে বাড়ীতে নির্বাচনে তার প্রতিপক্ষ পরাজিত প্রার্থী সজীব সরকার ও তার বাড়ীর লোকজনকেও দাওয়াত দেয়া হয়। অনেক ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সজীব সরকার ও তার বাড়ির লোকজন। চেয়ারম্যান মাসুদা জামান ও তার স্বামী হাসানুজ্জামান সরকার বিয়ের দাওয়াত খেয়ে পরিষদে ফিরে এলে সজীব সরকারের বাড়ীর (বড় বাড়ী) কিবরিয়া সরকারের ছেলে নিকচান সরকার বিয়ে বাড়ীতে যায় এবং বাড়ীর মালিকের কাছ থেকে চেয়ারম্যান ও তার স্বামীকে দাওয়াত দেয়া কারণ জানতে চায়। এসময় নিকচান সরকার বাড়ীর মালিককে চড় থাপ্পর মারে, খাবার-দাবার ফেলে দেয় এবং ৪টি গরু লুট করে নিয়ে আসে। পরে বাড়ীর মালিক ইউনিয়ন পরিষদে ছুটে গিয়ে চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানায়। এদিকে চেয়ারম্যানের কাছে খবর আসে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের বাড়ীতে হামলা করবে। পরে ঢেয়ারম্যান ও তার স্বামী বাড়ীতে গিয়ে হামলা করবে বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ আসলে পুলিশের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের বাড়ীতে ককটেল নিক্ষেপ করে ভাংচুর চালায় এবং বাড়ীঘরে আগুন দেয়। এসময় চেয়ারম্যান মাসুদা জামান একটি ঘরের মধ্যে লুকিয়ে থাকলে তাকে বের হওয়ার জন্য অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকে। এ অবস্থায় তিনি ঘর থেকে বের হয়ে আসলে তার হাত থেকে মোবাইল ফোনসহ ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। পরে চেয়ারম্যান মাসুদা জামান প্রাণ ভয়ে খালি পায়ে ক্ষেতের মাঝে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে এসে কোন মতে রাস্তায় উঠে নরসিংদী আসে।
এদিকে ঢেয়ারম্যানের বাড়ীতে আগুন দেয়ার ঘটনায় কামাল সরকারের ঘরসহ ৫/৬ ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় বড় বাড়ির লোকেরা। এসময় প্রায় ২০/২৫ টি বাড়ীঘর লুট করা হয়। এঘটনা আবু কালাম, বাহার উদ্দীন, সুফিয়া ও আ. বাতেনসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এই ঘটনায় বড় বাড়ীর নিকচান সরকার চেয়ারম্যানের বাড়ীতে হামলা বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এসব সব মিথ্যা ও বানোয়াট। বিয়ে বাড়ীতে গিয়ে বাড়ীর মালিককে চড় থাপ্পর বিষয়ে বলেন যেহেতু উনি আমাদের বংশের লোক তাই আমি জিজ্ঞেস করতেই পারি।
সজীব সরকারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এব্যাপারে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাফায়েত হোসেন পলাশ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন তবে গ্রেফতারের বিষয়টি পরে জানানো হবে বলে জানায়।
মন্তব্য করুন