মোঃ মাহমুদুল হাসান একই সাথে দুটি শিক্ষা কার্যক্রম (ফাজিল এবং বিবিএ) চালিয়ে যান, যা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় গ্রহণযোগ্য নয়। এই বিষয়ের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে খুলনা বিবিএ কলেজ থেকে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ৩য় সেমিস্টার বিবিএ এবং ফাজিল ডিগ্রি পরীক্ষার নিবন্ধনপত্র থেকে দেখা যায় তিনি একসাথে দুটি শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন। ১৯৯৭ সালের ফাজিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে তিনি কৃতকার্য হন এবং ৩ বছর পর বিবিএ ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
১৯৯৬ সালের অর্গানোগ্রাম কার্যবিধি নিয়ম অনুসারে, কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা হলো: বি.কম, বি.এড, এম.এ., বি.এসসি, ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার সায়েন্স অথবা বিএম (বেসিক মেকানিক্যাল) বা সমমানের ডিগ্রি। অথচ, মোঃ মাহমুদুল হাসান এই নিয়ম লঙ্ঘন করে ফাজিল ডিগ্রি দেখিয়ে অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ পান, যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং বেআইনি।
তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি কীভাবে এই পদে নিয়োগ পেলেন? তার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়ায় তার যোগ্যতা, পদ এবং সকল সুবিধা-সুবিধা ভোগ করে আসছেন।
তাছাড়া, সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, অধ্যক্ষ মোঃ মাহমুদুল হাসানের এই জাল ট্রান্সক্রিপ্ট দেখে কলেজের এক কাতারি ছাত্রীর সমন্বয় এবং ভবিষ্যতের উদ্বেগজনক মানবিকতার ক্ষতিসাধন করছে, পাশাপাশী শিক্ষা পরিবেশ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মারাত্মক হুমকি।
দেশের শিক্ষা নীতি অনুসারে, শিক্ষা বিধিমালা প্রণীতব্য বিধান লঙ্ঘন করে জালিয়াতির মাধ্যমে যদি কোনো ব্যক্তিকে অধ্যক্ষ বা কর্মচারী হিসাবে নিয়োগ করা হয় তবে সেটি একটি ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে। এর শাস্তি হিসেবে জেল-জরিমানা এবং যারা এই ধরনের জালিয়াতির সাথে যুক্ত থাকেন, তাদের সকলকে শাস্তির যোগ্য এবং সকল প্রকার নিয়োগ, পদ এবং সুবিধা-সুবিধা অবৈধ বলে গণ্য হবে।
মোঃ মাহমুদুল হাসানকে এক সুপরিকল্পিত জালিয়াতি, চারিত্রিক মিথ্যা বলিয়ে লোকেদের কাছে পরিচয় দিয়ে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা পরিচয় দেন। অথচ প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হলেন ডাঃ মাসুম বিল্লাহ। মোঃ মাহমুদুল হাসান তার দুর্নীতিগ্রস্ত কার্যকলাপের কারণে দুইবার স্থানীয় এলাকাবাসীর হাতে গণধোলাই খেয়েছেন। তার মিথ্যা ও প্রতারণামূলক কাগজপত্রের মাধ্যমে তিনি সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। যা সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
এলাকাবাসীর এক জ্যেষ্ঠ ব্যক্তির মন্তব্য: “একজন অধ্যক্ষ ও অনৈতিক ব্যক্তিকে যদি কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধভাবে অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয় তবে তা কেবল প্রতিষ্ঠানেরই নয়, সমগ্র সমাজের জন্য হুমকি স্বরূপ। কারণ, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এ ধরনের প্রতারণার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে যদি জালিয়াতি হয়, তবে সেই শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে কেমন মানুষ হবে?”
অভিযোগে জানা যায়, অধ্যক্ষ মোঃ মাহমুদুল হাসান স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে এবং বিগত আওয়ামী ক্ষমতাসীন দলের একটি অংশকে ব্যবহার করে নিজেকে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা দাবি করেন। অথচ কলেজ প্রতিষ্ঠার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন এলাকার মানুষদের সামাজিক উন্নয়নের জন্য ডাঃ মাসুম বিল্লাহ।
দুর্নীতিবাজ, প্রতারকতার দেশে অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে এবং তার অজ্ঞতার কারণে কলেজ প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই মাহমুদুল হাসান তার দুর্নীতিগ্রস্ত দল নিয়ে বিভিন্ন উপায়ে নিয়োগ বানিজ্য, ভুয়া কাগজপত্র, কলেজের তহবিলের অপব্যবহার ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে কলেজটি বিতর্কিত হয়ে পড়েছে।
জনতার দাবি: অভিযোগকারীরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন যে, মোঃ মাহমুদুল হাসানকে অবিলম্বে কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণ এবং তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জানা যায়, অভিযোগ প্রমাণিত হলে নিয়োগ বাতিলসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
মন্তব্য করুন