সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মো. রাসেল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির দাবিতে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)। ৮ মে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় এই স্মারকলিপিটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবের নিকট পাঠানো হয়।
সংগঠনের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর বলেন, ইউএনও রাসেলকে রংপুরে বদলি করলেও তা যথেষ্ট নয়। একজন পেশাদার সাংবাদিকের উপর হামলা ও তথ্য সংগ্রহে বাধা দেওয়ার পর ঘটনাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত না করেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় দুর্নীতি ও অনিয়মকে উস্কানি দেওয়া হয়েছে এবং প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ইউএনও রাসেল ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাংবাদিকতা পেশাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। একজন সাংবাদিককে বিনা শুনানিতে কারাদণ্ড ও জরিমানা করে সাংবাদিক সমাজের সম্মান ক্ষুণ্ন করেছেন।
তবে সংগঠনটি জানিয়েছে, তারা পুরো প্রশাসনের বিরুদ্ধে নয়; বরং ন্যায্য বিচার ও দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চায়।
প্রসঙ্গত, ২১ এপ্রিল উপজেলার একটি ভবন নির্মাণের অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়ে সাংবাদিক রোকনুজ্জামান টিপু (প্রতিনিধি, দৈনিক কালের কণ্ঠ) উপ-সহকারী প্রকৌশলী এমএম মামুনের দ্বারা হামলার শিকার হন। পরে ইউএনও রাসেল ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যের ভিত্তিতে সাংবাদিক টিপুকে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ২০০ টাকা জরিমানা করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সারাদেশে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক টিপুর স্ত্রী ইলোরা পারভীন তাকে মুক্ত করতে গিয়ে হুমকি ও বাধার সম্মুখীন হন। বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ২৪ এপ্রিল ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে সাংবাদিকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানায়। পরদিন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত টিপুকে জামিনে মুক্তি দেন।
পরে ৫ মে মামলার বিরুদ্ধে আপিল করা হয় এবং ৭ মে শুনানি শেষে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রিপন কুমার বিশ্বাস সাংবাদিক টিপুকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।
উল্লেখ্য, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব শহীদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে ইউএনও শেখ মো. রাসেলকে রংপুর বিভাগে বদলি করা হয়।
স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন বিএমএসএফ-এর সহযোগী সম্পাদক নুরুল হুদা বাবু, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ মাহমুদ, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সদস্য আশরাফুল ইসলাম রোহিত, সদস্য মনি আক্তার প্রমুখ।
মন্তব্য করুন