শাকুর মাহমুদ চৌধুরী, উখিয়াঃ
কক্সবাজারের উখিয়ায় স্ত্রীর মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে শিশু সন্তানসহ পালিয়ে গেছেন স্বামী। ঘটনার পর পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে এই হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম শোভা আক্তার সাদিয়া (২৫)। তিনি কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার নাথেরপেটুয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোহাম্মদ শফিকের মেয়ে।
সাদিয়ার স্বামী আকবর হোসেন শান্ত (২৯), একই এলাকার মমতাজুর রহমানের ছেলে। পেশায় তিনি উখিয়ায় একটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বিকাল ৫টার দিকে আকবর হোসেন স্ত্রীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। তার কোলেই ছিল তাদের ছোট কন্যাসন্তান। স্ত্রীকে হাসপাতালে রেখে আকবর দ্রুতই সেখান থেকে সরে পড়েন। কর্তব্যরত চিকিৎসক সাদিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসকরা জানান, নিহত নারীর চোখ ও কপালে আঘাতের চিহ্ন ছিল, যা প্রাথমিকভাবে শারীরিক নির্যাতনের ইঙ্গিত দেয়।
নিহত সাদিয়ার পিতা মোহাম্মদ শফিক মুঠোফোনে বলেন, ২০২২ সালে আকবর আমাদের অমতে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে আমার মেয়েকে বিয়ে করে। পরবর্তীতে আত্মীয় হওয়ার কারণে সম্পর্ক মেনে নিতে বাধ্য হই। কিন্তু সম্প্রতি আকবর পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে এবং আমার মেয়েকে নিয়মিত নির্যাতন করত।
তিনি আরও অভিযোগ করেন,
গত এক সপ্তাহ ধরে আকবর সাদিয়াকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিল। আমি নিশ্চিত, সে পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে।
নাথেরপেটুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ দৈনিক শীর্ষ অপরাধ কে জানান, আকবর এলাকায় একজন উগ্র স্বভাবের লোক হিসেবে পরিচিত। পরকীয়ার জের ধরেই এই ঘটনা ঘটেছে। আমরা দোষী ব্যক্তিকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আকবর হোসেন পলাতক রয়েছেন।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরিফ হোসাইন দৈনিক শীর্ষ অপরাধ কে জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। প্রাথমিক তদন্ত চলছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয় মহলে বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন।
মন্তব্য করুন