মুজাহিদ হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:
বিদ্যালয়ে নিয়োগ বোর্ডে প্রথম হওয়ার পর এক মাস পার হলেও নিয়োগপত্র পাননি মো. সিফাতুল্লাহ নামের এক চাকরিপ্রার্থী। সেই পদে পরীক্ষায় দ্বিতীয় হওয়া বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির নাতি মো. শহিদুজ্জামানকে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ বিধি অনুযায়ী এক মাসের মধ্যে নিয়োগ পত্র প্রদানের নির্দেশনা থাকলেও তা মানছেন না নওগাঁর পত্নীতলার আকবরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন ও প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সারোয়ার হোসেন। এ ঘটনায় সিফাতুল্লাহ নামের ওই চাকরিপ্রার্থী শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে রোববার সকালে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা যায়, গত ২১ ফেব্রুয়ারি পত্রিকায় আকবরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, নিরাপত্তা কর্মী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, নৈশ প্রহরী, আয়া ও অফিস সহায়কসহ মোট ৬টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে “অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী” পদে চাকুরীর জন্য আবেদন করেন সিফাতুল্লাহ নামের ওই চাকরিপ্রার্থী। গত ২৬ এপ্রিল ওই বিদ্যালয়ের নিয়োগবোর্ড অনুষ্ঠিত হয়। সেই নিয়োগ বোর্ডে ডিসির প্রতিনিধি সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আশীষ কুমার বসু ও ডিজির প্রতিনিধি সাপাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক “অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী” পদের নিয়োগ নির্বাচনী পরীক্ষায় তাকে প্রথম ঘোষনা করেন। ফলাফল ঘোষণার পর ডিজির প্রতিনিধি ও ডিসির প্রতিনিধিগণ বিদ্যালয় থেকে চলে আসার পর তারা এখন পর্যন্ত আর বিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে সেই ফলাফলের তালিকা প্রকাশ করেননি এবং এ পর্যন্ত তারা নিয়োগ পত্র দেননি। এরমধ্যে গত ৬মে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে ফলাফল শিট চেয়ে আবেদন করলে গতকাল প্রধান শিক্ষক আমাকে একটি অস্পষ্ট নম্বরপত্র দেন তাতে প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর নেই।
আমি যেন ওই বিদ্যালয়ে যোগদান না করি সে জন্য সভাপতি বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে আমাকে মারধরের হুমকি ও টাকার প্রলোভন দেন। কারণ আমি যোগদান না করলে ওই পদে সভাপতির নাতি মো. শহিদুজ্জামানকে নিয়োগ দিবেন। অথচ কম্পিউটার ব্যবহারিক পরীক্ষায় সে ঠিকমতো টাইপিং করতে পারেনি। পরিপত্র অনুযায়ী এক মাসের মধ্যে নিয়োগ পত্র প্রেরণের কথা উল্লেখ থাকলেও আমি এখন পর্যন্ত নিয়োগপত্র পাইনি।
এ বিষয়ে চাকরিপ্রার্থী সিফাতুল্লাহ বলেন, আকবরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট ৬টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে আমি “অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী” পদে চাকুরীর জন্য আবেদন করি। পরে আমি নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের পরীক্ষায় প্রথম হয়েছি বলে ডিজি ও ডিসি স্যারের প্রতিনিধি সকলের সামনে এই নিয়োগ বোর্ডের ফলাফল ঘোষণা করে গেছেন। সেই ফলাফল ঘোষণার অডিও রেকর্ড আমার কাছে আছে। এ নিয়োগ বোর্ড গঠনের এক মাস পার হলেও আমি নিয়োগপত্র না পাওয়ায় শিক্ষামন্ত্রী, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছি।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সারোয়ার হোসেন প্রথমে বলেন, এখনো কাউকে নিয়োগপত্র প্রেরণ করা হয়নি।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন বলেন, এবিষয়ে এখনো মিটিং করা হয়নি। অতি সত্বর মিটিং করে নিয়োগপত্র প্রেরণ করা হবে।
অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক মো. গোলাম মওলা বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন