1. editor.dso@gmail.com : admin :
  2. shirsoaparadhnews@gmail.com : দৈনিক শীর্ষ অপরাধ : shirso Aparadh
  3. maria.sgbd@gmail.com : Saiful : Saiful
  4. info.editor.dsa@gmail.com : Mahfuz Sarker : Mahfuz Sarker
রূপগঞ্জে ইউএনও’র উদ্যোগে ওয়ান থাউজেন্ড প্রজেক্ট - দৈনিক শীর্ষ অপরাধ
বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন রাত ৪:২৮ ২৭শে ভাদ্র, ১৪৩২ ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম :
হিজলায় মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন। কাতারে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানালো বাংলাদেশ আমতলীতে এতিমখানায়, ৪ সাংবাদিক এর বিরুদ্ধে চাদাবাজির অভিযোগ জালিয়াতির মাধ্যমে কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে মাহমুদুল হাসানের অবৈধ নিয়োগ নেপালের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ সরকার রাজস্থলীতে বিমাছড়া পাড়ায় পানি সংকট দূর করলো সেনাবাহিনী গাইবান্ধায় মহিলা দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত।। সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মানিক ও যুবলীগ নেতা মনির (আলাল-দুলাল) দুই ভাই বেপরোয়া। পটুয়াখালী ভার্সিটিতে, সামুদ্রিক শৈবাল থেকে, তৈরি হচ্ছে দেশ বিদেশের পুষ্টিকর খাবারসহ নানান প্রসাধনী।।

রূপগঞ্জে ইউএনও’র উদ্যোগে ওয়ান থাউজেন্ড প্রজেক্ট

  • Update Time : সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫
  • ৫৪ Time View

মো ওসমান গনি ,রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলামের উদ্ভাবনী উদ্যোগে বাস্তবায়িত ‘ওয়ান থাউজেন্ড প্রজেক্ট’ বদলে দিচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতির চিত্র। ইতোমধ্যে শতাধিক নারী-পুরুষ, তরুণ ও শিক্ষার্থী এই প্রকল্পের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।

সরকারি এই বিশেষ প্রকল্পে অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশু পালন, আধুনিক কৃষি, সেলাই, বিউটি পার্লার, ইলেকট্রিশিয়ান, কম্পিউটার এবং ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে। শুধু প্রশিক্ষণই নয় উদ্যোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় উপকরণ, প্রাথমিক মূলধন এবং ব্যবহারিক নির্দেশনা, যাতে প্রশিক্ষণ শেষে তারা সরাসরি আয়ের কাজে যুক্ত হতে পারেন।

উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মঙ্গলখালী গ্রামের শান্তা আক্তার আগে ছিলেন এক গৃহিণী, সংসারে সব সময় অভাব অনটন লেগেই থাকত। স্বামী ইয়াছিন কাজ করতেন ঢাকার একটি বেকারিতে,সংসার চালাতে যেখানে হিমশিম খেতে হতো, সেখানে সঞ্চয়ের প্রশ্নই ছিল না।
শান্তা জানান,প্রথমে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে হাঁস-মুরগি পালনের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। পরে নিজের বাড়িতে খামার গড়ে তুলি। বর্তমানে খামারে তিন শতাধিক হাঁস-মুরগি রয়েছে। মাসে ৩৫-৪০ হাজার টাকা আয় হয়। সংসারের অভাব এখন অতীত।
একই এলাকার ইয়াসমিন আক্তার জানান,
প্রথমে প্রশিক্ষণ ছাড়া খামার করেছিলাম, সব মুরগি মারা যায়। পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে সঠিক প্রশিক্ষণ নিয়ে নতুন করে শুরু করি। এখন টিকা-চিকিৎসা নিজেই করতে পারি। মাসে ভালো লাভ হচ্ছে। অভাব মিটে গেছে।
রিনা বেগম নামের আরেকজন জানান,
গরু পালনের প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি দুগ্ধ গাভি লালন করছি। প্রতিদিন দুধ বিক্রি করে ভালো আয় হয়। সংসারের খরচের পাশাপাশি সন্তানদের পড়াশোনাতেও সহযোগিতা করতে পারছি।
ভিংরাবো গ্রামের আফরোজা ইসলাম বলেন,
বিউটি পার্লারের কাজ শিখে বাড়িতে ঘরোয়া ভাবে শুরু করেছি। এখন অনেক নারী সাজগোজের জন্য আমার কাছে আসে। এতে মাসে ১২-১৫ হাজার টাকা আয় হয়।

মিথিলা নামের আরেক উদ্যোক্তা বলেন, আগে সংসারে অভাব ছিল, এখন বিউটি পার্লারের কাজ করে শুধু স্বাবলম্বী হয়নি, বরং দুইজন নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছি।
ভুলতার হাসিনা বেগম জানান, সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে উপজেলা প্রশাসন থেকে সেলাই মেশিন পেয়েছি। এখন ঘরে বসেই মাসে ১৫ হাজার টাকার বেশি আয় করি। আগে যারা সাহায্য করতো, এখন তারাই অবাক হয় আমার উন্নতি দেখে।

ফ্রিল্যান্সার ফাহিম হোসেন বলেন, অনলাইনে কাজ শিখে মাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকা আয় করি। এতে শুধু সংসার চালানো নয়, উচ্চশিক্ষার খরচও চালাতে পারছি। ভবিষ্যতে বড় পরিসরে কাজ করতে চাই।।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন,
আমাদের ‘ওয়ান থাউজেন্ড প্রজেক্ট’ মূলত এক হাজার পরিবারকে স্বাবলম্বী করার একটি পরিকল্পনা। আমরা চাই মানুষ শুধু সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল না থেকে দক্ষতা অর্জন করে দীর্ঘমেয়াদে নিজের পায়ে দাঁড়াক।
এখন পর্যন্ত দুই শত নব্বই জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। প্রকল্পে যারা যুক্ত হচ্ছেন, তাদের হাতে প্রাথমিক মূলধন, প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় উপকরণ তুলে দিচ্ছি। একই সঙ্গে আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি, যাতে তারা যেকোনো সমস্যায় দ্রুত সহায়তা পান।

তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য এককালীন আর্থিক সহায়তা দেওয়া নয়। বরং প্রত্যেককে এমনভাবে গড়ে তোলা, যাতে তিনি নিজেই আয়ের সুযোগ তৈরি করতে পারেন, অন্যদেরকেও কাজ দিতে পারেন। ইতোমধ্যেই অনেক নারী-পুরুষ সফলভাবে ব্যবসা শুরু করেছেন। এতে স্থানীয় অর্থনীতি সচল হচ্ছে, কর্মসংস্থান বাড়ছে। ভবিষ্যতে এই প্রকল্পকে আরও সম্প্রসারণ করা হবে।

স্থানীয়রা বলছেন, এ ধরনের প্রকল্প শুধু পরিবারকেন্দ্রিক পরিবর্তনই আনছে না, বরং গ্রামীণ অর্থনীতির সামগ্রিক গতিশীলতায়ও অবদান রাখছে। নারী, পুরুষ, যুবক-যুবতী ও শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে আয় করছে, নিজ নিজ পরিবারকে সচ্ছল করছে, পাশাপাশি কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত খুলছে।

ফলে রূপগঞ্জের গ্রামগুলোতে অভাব-অনটনের জায়গায় তৈরি হচ্ছে আত্মবিশ্বাস ও উন্নতির গল্প। ইউএনও’র এই উদ্যোগকে এখন অনেকেই দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির একটি আদর্শ মডেল প্রকল্প হিসেবে দেখছেন।

খবরটি ভাল লাগলে লাইক-শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

More News Of This Category
Theme Customized By Diggil Agency
Verified by MonsterInsights