আরিফুল ইসলাম:
বাংলাদেশসহ পুরো পৃথিবীতে প্লাস্টিক দূষণ এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্রতিদিনের জীবনে প্লাস্টিকের ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাটি, পানি, নদী ও সাগরে জমছে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ওয়েস্ট কনসার্নের জরিপ বলছে, শুধু ঢাকার চারপাশের চারটি নদীতেই জমেছে প্রায় ৩০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য। ২০০৫ সালে ঢাকায় প্রতিদিন ১৭৬ টন প্লাস্টিক উৎপাদিত হলেও ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪৬ টনে। এতে বছরে কোটি কোটি কেজি কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসৃত হচ্ছে।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিবেদনে বলা হয়, পৃথিবীতে প্রতি মিনিটে সাগরে গিয়ে মিশছে ১০ লাখ প্লাস্টিক বোতল এবং প্রতিবছর ১৩ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক ফেলা হচ্ছে সাগরে। এভাবে চলতে থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে মাছের তুলনায় সাগরে প্লাস্টিকের পরিমাণ বেশি হবে।
পরিবেশবিদরা বলছেন, প্লাস্টিক ভাঙতে সময় লাগে প্রায় এক হাজার বছর। এতে বাস্তুসংস্থান ধ্বংস হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সামুদ্রিক প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য। এর প্রভাব পড়ছে সরাসরি জলবায়ুতে।
তবে সমাধানের পথও আছে। ভারতে প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে রাস্তা বানানো, প্লাস্টিক থেকে জ্বালানি তেল তৈরি, এমনকি টাইলস ও ভবন নির্মাণের উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশেও আলাদাভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পুনঃপ্রক্রিয়াজাত ব্যাগ, কাগজ বা কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার, এবং বোতল সংগ্রহের ব্যবস্থা চালু করা গেলে অনেকাংশে প্লাস্টিক দূষণ কমানো সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কেবল আইন দিয়ে নয়; ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের সম্মিলিত উদ্যোগেই প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলা করা যাবে। আগামী প্রজন্মের জন্য পরিচ্ছন্ন পৃথিবী গড়ে তুলতে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
মন্তব্য করুন