সাভারের আশুলিয়া থেকে ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে আশুলিয়া থেকে নিখোঁজ হয় জিহাদ (১৪) নামে এক কিশোর।পরিবারের পক্ষ থেকে ভেবেই নেওয়া হয়েছিল আন্দোলনের সময় কোনোভাবে হয়তো মৃত্যু হয়েছে তার। তবে পুলিশের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ২ মাস পর নিখোঁজ জিহাদকে জীবিত খোজে পাওয়া যায়।
বুধবার, (১৬ অক্টোবর )এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও জাতীয় স্মৃতিসৌধ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ অলক কুমার দে।
এর আগে ১৮ আগস্ট আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার বাসিন্দা বেলাল হোসেন তার ছেলে জিহাদ নিখোঁজের ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। জিডিতে বলা হয়েছিল, ৫ আগস্ট রাত ৯টার দিকে জিরাবোর বাসা থেকে জিহাদ ও তার বোন ফাতেমা নিখোঁজ হয়। পরে পাশের এক বাসায় শিশুকন্যাকে খুঁজে পেলেও জিহাদকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
জিহাদের বাবা বেলাল হোসেন বলেন, ‘৫ আগস্ট রাতে জিহাদ বাড়ির পাশ থেকে নিখোঁজ হয়। হাসপাতাল, থানা, মর্গে খুঁজেছি। অনেক জায়গায় মাইকিং করেছি, বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার লাগিয়েও তার কোনো সন্ধান পাইনি। কোনো সন্ধান না পেয়ে ভেবেছিলাম জিহাদ আর কোনো দিনও ফিরবে না, ও হয়তো মারা গেছে। তবে শেষ ইচ্ছা ছিল, কোনোভাবে যাতে ছেলের লাশটা অন্তত পাই।’
আশুলিয়া থানা পুলিশ জানায়, ৫ আগস্ট মা-বাবার ওপর রাগ করে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় জিহাদ। সে পরিবারের সঙ্গে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের জিরাবোয় ভাড়া বাসায় থাকত। নিখোঁজের রাতে সে আশুলিয়ার বিভিন্ন সড়কে অবস্থান করে। পরদিন গাজীপুরের টঙ্গী রেলস্টেশনের ভাই ভাই হোটেলে এক ব্যক্তির সহযোগিতায় কাজ শুরু করে। নিখোঁজের পরদিন তার সঙ্গে থাকা মুঠোফোন চুরি হয়ে যায়। মুঠোফোনের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এসআই অলক কুমার দে বলেন, ‘৫ আগস্ট তৎকালীন সরকারের পতন ও সারা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে নিখোঁজ জিহাদের বাবা-মা তাদের সন্তানকে জীবিত অবস্থায় ফিরে পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন। থানায় জিডি করার পর একাধিক কর্মকর্তা জিহাদকে উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। সর্বশেষ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তাকে দায়িত্ব দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় টঙ্গীর একটি হোটেলে কাজ করা অবস্থায় জিহাদকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।’
মন্তব্য করুন