আব্দুল আজিজ তিতাস উপজেলা প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার তিতাসের সাতানী ইউনিয়নের চরকুমারিয়া "কাঁঠালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়"এর প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে নানাহ অভিযোগ তদন্তে প্রমানিত হওয়ায় উভয়কে আর্থিক জরিমানা ও স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গতকাল ১২ অক্টোবর শনিবার বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দিন ব্যাপী বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি, অভিভাবক সদস্যসহ সাত গ্রামের মানুষের উপস্থিতিতে অডিট কমিটি তদন্ত শেষে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
স্কুল পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা যায়, তিতাসের সাতানী ইউনিয়নের বারকাউনিয়া, চরকুমারীয়া, নয়াকান্দি, তাতুয়াকান্দি, মজমেরকান্দি, প্রথম স্বরসতী চর ও দ্বিতীয় স্বরসতীর চর মিলে এই সাত গ্রামের মানুষের ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় চরকুমারিয়া গ্রামে "কাঁঠালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়" প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিদ্যালয়টি শুরুতে বেশ ভাল ফলাফলসহ সুন্দরভাবে পরিচালিত হলেও গেলো ২০২১সাল থেকে রহস্যজনকভাবে অগ্নিসংযোগ, আসবাবপত্র চুরি ও নানাহ অনিয়ম দেখা দেয়। এ নিয়ে দফায় দফায় তদন্ত হলেও রহস্য উন্মোচন সম্ভব হয়নি। এছাড়াও বিদ্যালয়ে বিভিন্ন উৎস থেকে আয়ের ও ব্যয়ের হিসাবেও আকাশ-পাতাল গড়মিল দেখা যায়। এ নিয়ে সবশেষ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন ফজলুকে প্রধান করে ও মোঃ সামসুল হক মাস্টার, মোঃ মাহবুবুল হক সুমন মাস্টার, শিক্ষিকা নিলুফা বেগম ও মোঃ মনিব সরকারকে সদস্য করে ৫সদস্যের একটি অডিট কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির দীর্ঘ তদন্ত শেষে গতকাল শনিবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সাত গ্রামের মানুষের উপস্থিতিতে উন্মুক্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে কাঁঠালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন, বাহেরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন মাস্টার। উন্মুক্ত সভায় হিসাব-নিকাশ শেষে এক বছরে ৩লক্ষাধিক টাকা ও ৩বছরে ৯লক্ষাধিক টাকার গড়মিল থাকায় জুড়ি বোর্ডের মাধ্যমে কাঁঠালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহরাব হোসেন মিয়াকে ২০হাজার টাকা ও অফিস সরকারী সাইদুল ইসলামকে ১লাখ ২০হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং উভয়কে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, আমি কোন টাকা আত্মসাৎ করিনি। কেরানীর কথার ফাঁদে পড়ে ভুলের মাশুল দিতে হলো আমাকে।
তবে অফিস সহকারী সাইদুল ইসলামকে সরাসরি ও ফোনে পাওয়া না গেলেও সে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক থেকে লাইভে এসে নিজেকে নির্দোষ দাবী করে অভিযোগগুলো পরিকল্পিত বলে উল্লেখ্য করেন।
এ বিষয়ে অডিট কমিটির প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলা উদ্দিন ফজলু জানান, গত ৪ বছর ধরে বিদ্যালয়ে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি চলছিলো। আমরা কখনোই স্কুলের আয়-ব্যয়ের সঠিক হিসেব পেতাম না। সবশেষ সাত গ্রামের মানুষের উপস্থিতিতে বৈধ কাগজপত্রে প্রায় অনেক টাকার গড়মিল ও বিভিন্ন অনিয়ম-সেচ্ছাচারিতা প্রমানিত হওয়ায় দু'জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে ও জরিমানা করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান সরকার বলেন, অডিটে অর্থনৈতিক দুর্নীতি, সেচ্ছাচারিতাসহ বিভিন্ন অনিয়ম প্রমানিত হওয়ায় প্রধান শিক্ষক ও অফিস সরকারীকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে।
উন্মুক্ত সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট নুরাগী আব্দুল হক, শফিক ভূইয়া, মোঃ হারুন মিয়া, মোঃ মানিক, কামরুজ্জামান হিরা, প্রবীণ সমাজ সেবক এমএ করিম শওদাগর, সমাজ সেবক মোঃ শহিদুল্লা ভূইয়া, আব্দুল মতিন বেপারী, মোঃ আলেক মিয়া, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলিনুর ভুইয়া আশিক, সৌদী প্রবাসী রিপন বেপারী, ফ্রান্স প্রবাসী কবির হোসেন, বিশিষ্ট সমাজ সেবক আসাদ মিয়া, ইতালী প্রবাসী আল আমিনসহ সাত গ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, অভিভাক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শুরুর প্রাক্কালে বিদ্যালয়ের সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠাতা সাতানী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত এইচএম সালাউদ্দিন সরকারসহ বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট প্রয়াতদের রুহের মাগফেরাত কামনা দরুদ ও বিশেষ মোনাজাত করা হয় এবং প্রয়াতদের সম্মানে দাড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয় : এম এস প্লাজা, ২৮/১/বি, (৩য় তলা), টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০।ফোন নাম্বার-+8809697648889/ +8809638548103 , ওয়েবসাইট : www.shirsoaparadh.com, Email:editor.dso@gmail.com, shirsoaparadhnews@gmail.com
স্বত্ব © ২০১২-২০২৪ দৈনিক শীর্ষ অপরাধ