নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানী মোহাম্মদপুর ঢাকার ৩৩ নং ওয়ার্ডের ঢাকা উদ্যানে এবার খুন হলো নিরাপত্তা রক্ষী রবিউল। চোরদের হাতে-নাতে ধরে ফেলায় প্রতিশোধ নিতেই খুন করে রবিউলকে।
গত ১০ অক্টোবর রাত প্রায় ১ টায় এই ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তা রক্ষীর সুপারা ভাইজার আব্দুল হান্নান জানায় ১০ তারিখ রাতে নিহত রক্ষী রবিউল ডিউটিরত অবস্থায়, নেশাখোর ছিটকে চোর সুজন, সুমন ও ডিপজলকে ২০-২৫ কেজি রড চুরি করে সঙ্গীয়দের নিয়ে পালিয়ে যেতে দেখে ধাওয়া করে সুজনকে হাতে নাতে ধরে ফেলে, ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে চোর সুমন চোরাই মাল ফেলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরদিন রাতে রক্ষী রবিউল পুনরায় ডিউটিতে আসলে, খুনি সুজন ৫/৬ জন সহযোগী নিয়ে পূর্ব শত্রুতার প্রতিশোধ নিতে সুযোগ বুঝে রবিউলকে উপর্যপরি আঘাত করে, এক পর্যায়ে রবিউল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দৌড়ে পালিয়ে যায় খুনি সুজন ও তার সহযোগীরা। উপস্থিত শাওন ও আলআমিন মুমুর্ষ অবস্থায় রবিউলকে প্রথমে সহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ও পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়। সহকারী ম্যানেজার দেলোয়ার ও সুপারভাইজার হান্নান এবং রবিউলের পরিবার এরই মধ্যে ঢাকা মেডিকেলে পৌছে যায়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার রবিউলকে মৃত ঘোষনা করেন। এ বিষয়ে নিহতের বড় ভাই আশরাফুল আলম মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। মামলা নং- ২৫, তারিখঃ ১১/১০/২০২৪।
নিহত রবিউলের স্ত্রী চাঁদনী জানায় ঘটনার দিন রাত প্রায় ০৯.৩০ টায় ডিউটিতে যায় রবিউল, সেই যাওয়া যে তার শেষ যাত্রা সেটা কল্পনাও করতে পারিনি। এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে অল্প টাকায় ভাড়া থাকি। ১৩ বৎসরের মেয়েটা অষ্টম শ্রেনীতে পড়ে এবং ৯ বৎসরের ছেলেটি মাদ্রাসায় পড়ে। আমার সংসারে স্বামী রবিউল একমাত্র উপার্যন করতো, এখন আমি কি করবো বলতে বলতে কান্নায় র্মূচ্ছা যাচ্ছিল বার বার।
ঢাকা উদ্যান বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারাণ সম্পাদক ফজলুল করীম (বাদল) জানায় ঢাকা উদ্যানকে পরিচ্ছন আবাসিক এলাকা করতে আমরা সমিতির পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। প্রায় প্রতিটি রোডে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছি, নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ দিয়েছি। সামাজিক সচেতনতা মূলক কাজও করে যাচ্ছি। তারপর ও মাঝে মাঝে অশান্ত হয়ে উঠে ঢাকা উদ্যান এধরনের নেশাখোর ছিটকে চোর ও বহিরাগত মাস্তানদের কারনে।
সমিতির সহ-সভাপতি শাহাবুদ্দীন মীর জানায়, ঢাকা উদ্যানকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সমিতির পক্ষে থেকে নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ দিয়ে প্রতি রাতে পর্যায়ক্রমে ডিউটি চালু রেখেছি। তাদেরকে হাতের লাঠি ব্যতিত আর তো কিছু আমরা দিতে পারি না কিন্তু অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা যদি এসব রক্ষীদের উপর আক্রমন করে তবে আমরা আইনের আশ্রয় ছাড়া আর কি করতে পারি।
সমিতির পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানায়, আমরা সরকারের কাছে এধরনের অপরাধী কর্তৃক নিসংশ খুনের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করি। সমিতির কোষাদক্ষ ইসমাইল হোসেন মিলন জানায়, আমরা ঢাকা উদ্যানে সামাজিক সম্পৃতির মধ্যে বসবাস করতে চাই এবং কোন য় জোর প্রচেষ্টা শুরু করে দিয়েছি। আশা করি খুব শীগ্রই আসামী ধরা পড়বে, আমরা সচেষ্ট আছি। ঢাকা উদ্যানবাসী সব ধরনের অপরাধ মুক্ত সামাজিক ভাবে নিরাপদ বসবাসের আবেদন করছে সরকারের কাছে।
মন্তব্য করুন