আব্দুল আজিজ কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার তিতাসের শাহপুরে দুই পরিবারের দীর্ঘদিনের আধিপত্য ও বিরোধের জেরে মজিদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সরকারের আপন বড় ভাই রিপন সরকারকে ষড়যন্ত্র মূলকভাবে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়ে তার বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সরকার তার ব্যক্তিগত ফেসবুক লাইভে এসে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো এবং যৌথবাহিনী চলে যাবার পর বাড়ী-ঘরে হামলা ও লুটপাটের এ অভিযোগ করেন।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে সেনাবাহিনী ও তিতাস থানা পুলিশের একটি যৌথ টিম উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন।
এসময় মজিদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সরকারের বাড়িতে তল্লাসি চালিয়ে তার আপন বড় ভাই মো. রিপন সরকারকে আটক করে এবং ঘরে তল্লাশি চালিয়ে একটি বিদেশী অস্ত্র উদ্ধার করে রিপনকে অস্ত্রসহ তিতাস থানায় হস্তান্তর করেন।
এদিকে যৌথ বাহিনী অভিযান শেষ করে চলে যাবার সাথে সাথে প্রতিপক্ষের লোকজন রিপন সরকারের বাড়ীতে হামলা করে ভাংচুর ও লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ করেন।
বিষয়টি জানা জানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটিকে ষড়যন্ত্র বলে অনেকেই দাবি করতে দেখা যায়। কমেন্টের ঘরে অনেকেই লিখেন প্রবাসী রিপন সরকারকে প্রতিহিংসা করে ফাঁসানো হয়েছে।
ঘটনায় আটককৃত রিপন সরকারের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, মঙলবার রাত সাড়ে ৯টায় তাদের বাড়িতে যৌথবাহিনীর একটি টিম সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও তার ভাই রিপন সরকারের বিল্ডিং অবৈধ মালামাল রাখার অভিযোগে তল্লাসি চালায়। ঘন্টা খানেক তল্লাশি করে কোন অবৈধ মালামাল না পেয়ে তিতাস থানা পুলিশের একটি টিমকে পুনরায় তল্লাশি করতে বলেন বলে রিপন সরকারের পরিবারের সদস্যরা সাংবাদিকদের জানায়।
এসময় তিতাস থানা পুলিশ সদস্যদের সাথে একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ ফারুক মিয়া সরকারের ছেলে ফারাবী ও হাসানের ছেলে রাফিসহ বেশ কয়েকজন বিল্ডিং এ প্রবেশ করে।
তাদের দাবী, ফারাবী ও রাফি যে রুমে প্রবেশ করেছে সেই রুমেই অস্ত্রটি পাওয়া যায় এবং তারাই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টিমের সদস্যদের দেখিয়ে দেয়। তাদের দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সত্যতা বের হবে বলেও তারা দাবি করেন।
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, যৌথ বাহিনী চলে যাবার পর আমাদের বিল্ডিং এ হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে বিল্ডিং এ থাকা মালামাল, স্বর্নলংকার ও নগদ অর্থসহ সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক সব লুটপাট করে নিয়ে যায় এবং আমাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর নির্যাতন চালায়।
এঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকরা জাতীয় পার্টির মনোনীত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক মিয়া সরকারের কাছে জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। পরে ওনার ছেলে ফয়জুল্লাহ ফারাবীর মুঠোফোনে কল করলে তিনি বলেন, পূর্বে রিপন সরকার আমার উপর হামলা চালিয়ে মারধর করে সেই ঘটনায় সেনাবাহিনীর নিকট আমার লিখিত অভিযোগ দেওয়া ছিল। পরে মঙ্গলবার রাতে সেনাবাহিনী অভিযানে আসলে তাদের বাড়ি কিভাবে যাবে তা ফোন দিয়ে জানতে চাইলে আমি ও রাফিল উপস্থিত হয়ে তাদের বাড়ি দেখিয়ে দিয়ে গেইটের সামনে থেকে দ্রুত চলে আসি এবং আমাদের গৌরিপুরের বাসায় অবস্থান করি তখন রাত প্রায় সাড়ে ১১টা বাজে। সেই সময়ও অভিযান চলমান ছিল বলে আমি জানতে পারি এছাড়া আর কোন বিষয় আমি জানি না। তাদের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাটসহ আমাদের বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
মন্তব্য করুন