স্টাফ রিপোর্টমোহাম্মদপুরের সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুই ভাইয়ের সিন্ডিকেট বাণিজ্য বন্ধের সোমবার (৮ জুলাই) দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদকে) চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এন্ড প্রেস সোসাইটির দপ্তর সম্পাদক ইসমাইল উদ্দিন এই অভিযোগ দেন বলে জানা গেছে।
দুদকে করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নুর আলম প্রিন্স তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সের মোহাম্মদপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত এক্সট্রা মোহরা (নকল নবিশ) আওলাদ হোসেন এবং তার সহদর আকিব হোসেনের বিরুদ্ধে জাল-জালিয়াতি, দালাল সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণসহ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন না। শুধু দুদক ই নয় এছাড়াও আরো তিনটি সরকারি দপ্তরে অভিযোগ আছে বলে জানা যায়। তবে ওই অফিসে আওলাদ হোসেনের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ‘নো ওয়ার্ক, নো পেমেন্ট’ পদ্ধতিতে চাকরি করা এক্সট্রা মোহরার বা নকল-নবিশরা পাতা প্রতি পান মাত্র ২৪ টাকা। সারাদেশে এমন নকল নবিশের সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার। সে হিসেবে একজন নকল নবিশের মাসে আয় ১৫/২০ কিংবা ২৫ হাজার টাকার বেশি নয়। বর্তমান বাজারে এই সামান্য টাকায় পরিবার নিয়ে দু’বেলা ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকাই দায়। অথচ আওলাদ হোসেন তার গ্রামের বাড়িতে-বিশাল মাছের ঘের-ফ্ল্যাটসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে গেছেন। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে আঙুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী।মোহাম্মদপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে এই দুই ভাইয়ের সিন্ডিকেট বাণিজ্য এখন টক অব দ্যা টাউন।তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সের মোহাম্মদপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত এক্সটা মোহরা (নকল নবিশ) আওলাদ হোসেন এবং তার সহোদর আকিব হোসেনের বিরুদ্ধে জাল- জালিয়াতি, দালাল সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ এবং নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করার অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর মারফত জানা যায় নকল নবিশ আওলাদ হোসেন বিগত ১০ বছর যাবত এই অফিসেই কর্মরত হয়েছেন কিন্তু তিনি তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে দিব্যি তার বিভিন্ন অপকর্মগুলো চালিয়ে যাচ্ছেন। আওলাদ হোসেনের পূর্বের ইতিহাস খুবই ন্যাক্কারজনক ২০২৩ সালের ১২ই নভেম্বর দিবাগত রাতে নুর হোসেনের বাড়িতে তার সহোদর ভাই মোঃ আকিব হোসেন ও তাদের একদল সন্ত্রাসী সহযোগী ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়ে ঐ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ১৬ই নভেম্বর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করা হয়।১,৭০০০০ (এক লক্ষ সত্তর হাজার টাকা)নগদ সহ অন্যান্য দামি জিনিস পত্র ডাকাতি করেন। এছাড়াও মোঃ আওলাদ হোসেন জামায়াতের একজন উগ্রবাদী কর্মী হিসেবে কাজ করতেন বর্তমানে তিনি আওয়ামীলীগে যোগদান করে বিভিন্ন সিন্ডিকেট সদস্য নিয়ে তেজগাঁও রেজিষ্ট্রেশন অফিসে দাপট দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।এই আওলাদ হোসেন প্রশাসনের হাত ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অবৈধভাবে জমি রেজিস্ট্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে মোহাম্মদপুরের সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের এক্সট্রা-মহোরার আওলাদ হোসেন দৈনিক শীর্ষ অপরাধ কে বলেন, আমার বহু জায়গা সম্পত্তি আছে। অভাব নাই! উত্তরা, টঙ্গী, বাড্ডা, তেজগাঁও, হাতিরঝিল ও ইন্ডিয়ায় জায়গা আছে। আমি স্বীকার করলাম আমি দুদকে যাব। আমার অনেক ভাই বন্ধু-বান্ধব এ ক্লাস পত্রিকা আছে। রেজিস্টার অফিসের ইনকামে আমরা চলতে পারিনা। আমি প্রত্যেক মাসে যে বাড়ি ভাড়ার টাকা পাই সে টাকা দিয়ে আমার ৩০ পুরুষ খাইতে পারবে। আমার ব্যবসা-বাণিজ্য সব আছে। যার বাবার এত জায়গা আছে উত্তরা, টঙ্গী, বাড্ডা তার আবার অফিসে চাকরি লাগে নাকি? আমার নানা ১৯৭৮ সালে এই এলাকায় কাউন্সিলর ছিল। ৪০০ বিঘা সম্পত্তি রাইখা গেছে। এই এলাকায় আমার এত সম্পত্তি আমি রেজিস্ট্রি অফিস লইয়া পইড়া রইছি?
মন্তব্য করুন