একরামুল হক , ফেনী:
টানা তিন দিনের ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে আসা ঢলের পানিতে ফেনী জেলার মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর অন্তত ২০টি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে। এর ফলে ফুলগাজী, পরশুরাম ও ফেনী সদর উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দেড় লক্ষাধিক মানুষ। নতুন নতুন এলাকা এখনো প্লাবিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, মুহুরী নদীর ১০টি, কহুয়া নদীর ৬টি এবং সিলোনিয়া নদীর ৪টি স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। প্রবল স্রোতে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে এবং সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
জেলার ছয় উপজেলায় ১৩৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বর্তমানে ৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৭ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। বন্যার্তদের সহায়তায় ইতোমধ্যে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
দৌলতপুরের জহিরুল রাজু বলেন, “গেল বছরের ক্ষতি এখনো কাটেনি, আবারও পানিতে ডুবতে হলো। ঘরের সবকিছু ভেসে গেছে।”
উত্তর শ্রীপুরের বাসিন্দা আলী আজ্জম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিবছরই জুলাই-আগস্টে বাঁধ ভাঙে। সরকার বদলায়, কিন্তু আমাদের দুর্ভোগ বদলায় না।”
গাইনবাড়ির পুষ্পিতা রাণী জানান, “শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে চরম দুর্ভোগে আছি। শুকনো খাবার আর বিশুদ্ধ পানির অভাবে দিন কাটছে।”
ফেনী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামীকালও হালকা বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, “সকাল ৯টার দিকে নদীর পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে বাঁধ ভাঙা স্থান দিয়ে পানি ঢুকে নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানি কমার পর মেরামতের কাজ শুরু হবে।”
মন্তব্য করুন