সোহরাব হোসেন মুন্না
রায়পুরা নরসিংদী
রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরায় অবস্থিত মাটি প্রোপ্রার্টিজ স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের একটি কক্ষে আরিফুল হত্যাকান্ডের ঘটনায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ,
নরসিংদীর একটি কলেজে লেখাপড়া করার সময় নরসিংদীর ঘোড়াদিয়া এলাকার বাসিন্দা কানাডা প্রবাসী নাজমুল হাসান বাবুর সাথে পারভীন আক্তারের বিয়ে হয় স্বামী কানাডায় থাকার সময় আরিফুল ইসলামের সাথে পারভীন আক্তারের পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়, বন্ধুত্বের ঘনিষ্ঠতা থেকে তারা গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তখন থেকে তারা দুইজন অন্তরঙ্গ মুহূর্তের জন্য সময় কাটাতে স্বামী স্ত্রীর মিথ্যা পরিচয়ে বিভিন্ন হোটেলে থাকতে শুরু করেন,
পারভীন আক্তারের কানাডার ভিসা হলে ২ মাস আগে তিনি স্বামী নাজমুল হাসান বাবুর কাছে কানাডায় চলেন যান, নিহত আরিফুল ইসলাম ২ বছর আগেই জাপান চলে যান,
এরপর তাদের দুজনের মধ্যে কিছুদিনের জন্য দুরত্ব তৈরি হলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি নিহত আরিফুল জাপান থেকে পুনরায় পারভীনের সাথে দফায় দফায় যোগাযোগ শুরু করেন এবং তাকে দেশে চলে আসার জন্য চাপ দিতে থাকেন, কিন্তু পারভীন দেশে আসতে রাজি না হওয়ায় আরিফুর তাকে তাদের আপত্তিকর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও তার স্বামী ও আত্মীয় স্বজনের কাছে পাঠানোর হুমকি দেন, হুমকি ধামকির পরও পারভীন আক্তার দেশে না আসায় তার স্বামীর কাছে তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কিছু ছবি ও ভিডিও পাঠান, আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়,
স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কলহের কারণে পারভীন আক্তার ঢাকায় আসার এবং আরিফুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন,
পরিকল্পনা অনুযায়ী পারভীন আক্তার ১৬ মে বৃহস্পতিবার কানাডা থেকে ঢাকায় এসে খিলক্ষেত এলাকার একটি হোটেলে উঠেন,
পারভীন আক্তারের ঢাকায় আসার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ১৭ মে শুক্রবার আরিফুর জাপান থেকে ঢাকায় আসেন, এরপর দুজন একসাথে বসুন্ধরার মাটি প্রোপ্রার্টিজের স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া করা কক্ষে উঠেন, আরিফুল ঢাকায় আসার আগেই অনলাইনে স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টির একটি কক্ষ বুকিং দিয়ে রাখেন,
পরিকল্পনা অনুযায়ী পারভীন আক্তার প্রায় ৫০ ঘন্টার কিলিং মিশন শেষে করে ১৮ মে শনিবার কাতার এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে কানাডায় চলে যান,
১৫ দিন পর পুলিশ আরিফুলের মরদেহ স্টুডিও আ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া নেওয়া কক্ষ থেকে উদ্ধার করেন,
আরিফুল হত্যাকান্ডের তদন্তের স্বার্থে পুলিশ পারভীন আক্তারের বাবা নজরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন,
পুলিশের উপস্থিতিতে পারভীন আক্তারের বাবা নজরুল ইসলাম মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলে ঘটনার বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে পারভীন আক্তার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন,
সিসিটিভি ফুটেছে দেখা যায় মাটি প্রোপ্রার্টিজের স্টুডিও অ্যাপর্টমেন্টে দুইজন একসাথে প্রবেশ করলেও পরদিন পারভীন একাই কক্ষ থেকে বেড়িয়ে যান,
পুলিশের ধারণা মরদেহের পাশে পাওয়া চিরকুটের হাতের লেখা, রোটারির মাধ্যমে করা ভুয়া বিয়ের হলফ নামায় পারভীনের স্বাক্ষর এবং স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের ফরমে থাকা হাতের খেলা পারভীনেরই তবে তা পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার জন্য লেখা গুলো কোন এক্সপার্টের কাছে পাঠানো হবে এবং ইন্টারপোলের সাথে কথা বলে পারভীন আক্তারকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে,
হত্যাকান্ডের বিষয় নিয়ে পৃথক পৃথকভাবে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার রিফাত রহমান শামীম এবং ডিএমপির বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার রাজন কুমার সাহা,
নিহত আরিফুল ইসলাম, পারভীন আক্তার ও তার স্বামী নাজমুল হাসান বাবু এই তিন জনের বাড়ীই নরসিংদী জেলায়।
মন্তব্য করুন