মাহাবুবুর রহমান,ফুলছড়ি (গাইবান্ধা),
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ছালুয়া ফজলে রাব্বী উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
উল্লেখ্য, এ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া ছিলেন সাঘাটা-ফুলছড়ি আসনের সাতবারের সংসদ সদস্য, সাবেক মন্ত্রী এবং ডেপুটি স্পিকার। তিনি নিজ অর্থায়নে না করেও নিজের নামে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত করেন।
বিদ্যালয়টি একটি সরকারি পরীক্ষাকেন্দ্র হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে এর অবকাঠামোগত অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। ভবনটি টিনশেড ও ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। মাত্র দুইতলা বিশিষ্ট ছয় কক্ষের একটি ভবন থাকলেও শিক্ষকরা এর মধ্যে দুইটি অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করছেন।
অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ফজলে রাব্বী মিয়ার নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রকল্প এনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীদের মূল্যায়নের নামে বাণিজ্য করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তার কন্যা ফারজানা রাব্বী বুবলি, যিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
অভিভাবক সদস্যরা বিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রসঙ্গে কথা বললে সভাপতি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমি এমপির মেয়ে, এটি আমার বাবার প্রতিষ্ঠান। আমি একজন বিচারপতির স্ত্রী।” তার এই ধরণের আচরণে অভিভাবক সদস্যরা মুখ খোলার সাহস পান না।
১৫ মে ২০২৪ ছিল প্রধান শিক্ষিকা রওশন আরার শেষ কর্মদিবস। তিনি সভাপতির নির্দেশে সহকারী শিক্ষক সাইদুর রহমানের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। এরপর কোনো অভিভাবক কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। জানা যায়, সভাপতির নির্দেশেই সাইদুর রহমান হাইকোর্টে রিট করে ফারজানা রাব্বী বুবলির সভাপতির পদ বহাল রাখেন এবং তাঁর স্বাক্ষরে বিল উত্তোলনও চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, “এটি উচ্চ পর্যায়ের বিষয়, হাইকোর্টের ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতির স্বাক্ষরে বিল উত্তোলন বন্ধ থাকার কথা থাকলেও এখানে তা মানা হচ্ছে না।
স্থানীয় অভিভাবক মহল ও সচেতন নাগরিকরা দাবি করেছেন, বিদ্যালয়ে চলমান দুর্নীতির বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাধ্যমে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
মন্তব্য করুন