নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “২০২৪ সালের ৫ আগস্ট যা ঘটেছে, তা শুধু বাংলাদেশের নয়, সমগ্র বিশ্বের রাজনৈতিক ইতিহাসেও এক অনন্য ও নজিরবিহীন ঘটনা।” তিনি এ মন্তব্য করেন মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায়।
তারেক রহমান বলেন, “এই দিনে ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসান ঘটেছে। এক বিভীষিকাময় অধ্যায়ের ইতি টেনে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকামী জনতা জয়ী হয়েছে। গণতন্ত্রের সূর্যপথে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার দিন এটি।”
তিনি বলেন, “একুশ শতকের বাংলাদেশে দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটেছে এই দিনে। পলাতক স্বৈরাচার রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে ভয়, নিপীড়ন, গুম, খুন এবং রাজনৈতিক হয়রানিকে রাষ্ট্রনীতিতে রূপান্তর করেছিল। সেই বিভীষিকাময় শাসনের বিরুদ্ধে দেশের কোটি মানুষ, কৃষক-শ্রমিক, নারী-পুরুষ, ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমেছিল।”
তারেক রহমানের ভাষ্য মতে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন এবং প্রায় ৩০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকে চিরতরে পঙ্গু বা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, “এই আন্দোলন ছিল স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ। ১৯৭১ সালে যেমন আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হয়েছিলাম, তেমনি ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান ছিল গণতন্ত্রের পুনর্জন্মের প্রতীক। শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে না।”
তারেক রহমান বলেন, “৫ আগস্টে যা ঘটেছে, তা ইতিহাসে বিরল। গণভবন, সংসদ, আদালত, মসজিদ, মন্ত্রিসভা—সব জায়গা থেকে পালিয়েছে ফ্যাসিস্টচক্র। অথচ আজও তাদের মনে অনুশোচনা নেই। কিন্তু দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে—বাংলাদেশে আর কখনও ফ্যাসিবাদ কায়েম হতে পারবে না।”
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত শক্ত করতে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে অংশ নিতে হবে। ভিন্নমত থাকবে, সেটিই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। তবে এই ভিন্নমত যেন কখনো ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের পথ না করে দেয়।”
বিএনপি নেতা সবাইকে আহ্বান জানান আইনের শাসন ও সহনশীলতার পথে অটল থাকতে। তিনি বলেন, “জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা না হলে রাষ্ট্র কখনোই শক্তিশালী হতে পারে না। তাই আসুন, আমরা জনগণের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়ে ইনসাফভিত্তিক মানবিক বাংলাদেশ গড়ি।”
তারেক রহমানের ভাষণে ৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে একটি নতুন রাজনৈতিক অঙ্গীকার স্পষ্ট হয়ে ওঠে—একটি ফ্যাসিবাদমুক্ত, গণতান্ত্রিক, মানবিক ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গঠনের দৃঢ় প্রত্যয়।
মন্তব্য করুন