নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যর প্রয়োজন বলে মনে করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটি বলছে, বিএনপির জাতীয় ঐক্যের যে আহবান জানিয়েছে তার সঙ্গে তারা একমত, এখানে তাদের কোন দ্বিমত নেই। একই সঙ্গে ন্যুনতম সংস্কার যেগুলো দরকার, সেগুলো যতদ্রুত সম্ভব করে নির্বাচন দিয়ে দেয়া উচিত বলেও মনে করছে দলটি।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এক জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
দেশ আমাদের সবার উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, জাতি, ধর্ম, দল-মত নির্বিশেষে সবাই মিলে জাতীয় ঐক্য আরো কিভাবে দৃঢ় করা যায়, প্রশাসনে আরো কিভাবে গতি আনা যায়- এসমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি আলোচনা হয়েছে, দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি, যেটাতে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। এটাকে লাঘব করার জন্য মানুষের সামর্থ্যরে মধ্যে দ্রব্যমূল্যে আনার জন্য কি পদক্ষেপ নেয়া যায়, এসমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রমজান মাস আসছে। এটাকে সামনে রেখে যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারেন। এসমস্ত বিষয়েও আমরা পরামর্শ দিয়েছে।
নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আজকের প্রেক্ষাপট ঠিক ওইরকমটা ছিল না। এজন্য ওই ব্যাপারে আমরা আলোচনা করি নাই। আরেক প্রশ্নের জবাবে জামায়াত আমীর বলেন, শুধু ইসকন না। আমরা বলেছি, জাতীয় স্বার্থে বিরুদ্ধে যারাই যাবে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বৈঠকে জাতীয় ঐক্যের কথাটা এসেছে। উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করতেই তো আমরা বসেছি। আমাদের দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা কারা ধ্বংস করতে চায়। তাদের চিহ্নিত করতে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে এটাকে মোকাবিলা করতে হবে। আর জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে একেবারে একমত, এখানে কোন দ্বিমত নাই। জাতীয় ঐক্য অবশ্যই থাকতে হবে।
নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের অবস্থানের বিষয়ে এক প্রশ্নে শফিকুর রহমান বলেন, ন্যুনতম সংস্কার যেগুলো দরকার। আমাদের সংস্কারের ৪১ দফা দাবি আছে। এই সরকারের জন্য আমরা ৪১ দফা দেইনি। আমরা মাত্র ১০ দফা দিয়েছি। আমরা চাই যে, এই সংস্কারগুলো দ্রুত করা দরকার। এই সংস্কারগুলো করে যতদ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিয়ে দেয়া উচিত।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও অনেক আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়ার কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই সকল আলোচনায় আমরা একমত হয়েছি যে, দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়েই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। আর দেশের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে যারাই জড়িত থাকবে তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। আইনের আওতায় এনে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে দিতে হবে। এজন্য প্রয়োজন হচ্ছে, সর্বোচ্চ জাতীয় ঐক্য। দল-মত, ধর্ম ভিন্নতা থাকবে, এটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু জাতীয় স্বার্থের জায়গাগুলো যাতে আমরা সবাই একমত এবং ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি, এই আহ্বান আমরা জানাই।
জামায়াত আমীর বলেন, আমরা দেশের বর্তমান বিদ্যমান পরিবেশ ও পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছি। আগামীতে দেশ কিভাবে শান্তি ও শৃঙ্খলার সঙ্গে থেকে একটা কার্যকর নির্বাচনের দিকে এগোতে পারে। সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান শুভ্র, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতের প্রতিনিধি দলে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন