সামিমা আক্তার:
নারায়ণগঞ্জে ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের পাহাড়সহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠলে ও স্বৈরাচার সরকারের সাবেক এম পির শামীম ওসমানের কাছের লোক হওয়ায় রয়েছে বহাল তবিয়তে ।
শামীম ওসমানের ছত্রছায়ায় থেকে বাগিয়ে দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ নায়েব দের কমিটির সভাপতির পদ। সরকারী ওই কর্মচারী বর্তমানে নারায়গঞ্জের রুপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত আছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠলেও তিনি এখনও বহাল তবিয়তে চাকুরী করছেন। জানাযায়, ১৯৯০ সালে সহকারী ভূমি অফিসে তৃতীয় শ্রেণির কর্মাচারি হিসেবে চাকুরিতে যোগদান করেন।চাকরির যোগ দান কালে ১২ শত টাকা বেতন স্কেলে চাকরি শুরু করেন। চাকরি কালিন সময়ে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় দায়িত্ব পালন করেন। আর্থিক অনটনের মধ্যেই পরিবারের হাল ধরেন তিনি। চাকুরীতে যোগদানের বছরের মধ্যেই অবৈধ ভাবে গড়া অর্থের ঝনঝনানি শুরু হয়। কোন রকম পরিবারের থেকে উঠে আসা কামাল গড়ে তোলেন কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নামে বেনামে একাধিক বাড়ি। এরমধ্যে অভিযোগ উঠে নানা ধরনের অনিয়মের, ভূমি উন্নয়ন কর, দাখিলা, মিউটিশন, কলম দিয়ে লিখে জাল পর্চা ও তদন্তদের নাম করে সেবা প্রার্থীদের কাছ থেকে নিচ্ছেন মোটা অংকের উৎকোচ। গড়েছেন সম্পদের পাহাড়, একজন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব তার গল্পটা শুনলে মনে হবেনা, যে তিনি তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী। দালান কোঠা অট্টালিকা দেখে মনে হবে তিনি এ দেশের একজন শিল্পপতি।
এতক্ষণ যে বিষয়গুলো বললাম, যার বিষয়ে বললাম আসুন তার সাথে পরিচয় হয়ে নেই। ওনার নাম কামাল হোসেন, বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার একরামপুর গ্রামে। গরিব ঘরের সন্তান কামাল, একসময় তার পরিবারের নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা ছিল। সোনার হরিন সরকারী চাকুরী পাওয়ার পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তার। গড়ে তোলেন অবৈধ সম্পদের স্বর্গ রাজ্য।
একরামপুরে করেছেন আধিপত্য বিস্তার, মানুষের মনে সৃষ্টি করেছেন ভয় আতংক, তার বিরুদ্ধে কথা বললে কি যেন এক অদৃশ্য শক্তি টুটি চেপে ধরেন। এলাকার সাধারণ মানুষ কামালের বিরুদ্ধে এভাবেই কথা গুলো বলেন শামীম ওসমানের প্রভাব খাটিয়ে এমন কোন কর্ম নেই যে তিনি করেননি আওয়ামী সরকারের পতনের পর এলাকাবাসী কামালের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। ।
ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কোটিপতি নায়েব কামাল হোসেনের সীমাহীন দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ নারায়ণগঞ্জবাসী।
তার বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি এবং জনহয়রানির অভিযোগের অন্ত নেই। যেখানে যত বড় দুর্নীতি সেখানে তত বড় মাথা, আর এসব মাথা মানেই হলো কামালগং কামাল নারায়ণগঞ্জ এর বিভিন্ন ইউনিয়ন অফিসে চাকুরী করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলছেন, টাকা ছাড়া কমালের অফিসে কোনো ফাইলেই সই হয়না। অনেকেই বলছেন, টাকা দিলেও কামাল হোসেনের চাহিদা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত গ্রাহকদের ঘুরতে হয় দিনের পর দিন। জমির নামপত্তন, হাল নাগাদ, খাজনা দাখিলা কর্তন, মিউটেশনে ভুলভ্রান্তির সংশোধন, ভিপি সম্পত্তি, দেওয়ানি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন, ১৪৪ ধারার পিটিশন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন, এলএসডি মামলাসহ হরেক রকম কাজের সঙ্গে সম্পৃত্ত থাকতে হয় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে।
কিন্তু কামাল হোসেন সেই আইনকে তোয়াক্কা না করে সব কাজেই অর্থ বাণিজ্য করেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। এই ঘুষ বাণিজ্য করেই কামাল বন্দরের একরামপুরে সাত তলা বিশিষ্ট ভবন, পাশেই দশ কাঠার বাগানবাড়ি,বন্দরের আমিন আবাসিক এলাকার বিএসএস শাহ রোডে ১০ কাঠার ৬ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে কাজ চলমান। ঢাকার টিকাটুলি ১০ অভয় দাশ লেন রোডেন সুফিয়ানী প্লাজায় রয়েছে কয়েকটি প্লাট। চরেন অর্ধ কোটি টাকা দামের গাড়ি দিয়ে। একমাত্র তত্ত্বক মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছেন ইউরোপে রেখে। সবমিলিয়ে শিল্পপতির স্টাইলে চলাফেরা কামালের। নামে বেনামে করেছেন সম্পদের পাহাড় রয়েছে ব্যাংক ব্যালেন্স। এসব অভিযোগকারীরা অবিলম্বে এই দুর্নীতিবাজ ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
আর তার এই কাজের প্রধান হাতিয়ার অফিস সহায়ক রাসেলগংরা। তিনি অফিসে আগত লোকদের ভুল-ভাল বুঝিয়ে একটা পরিবেশ তৈরি করে স্যারের কাছে নিয়ে যান। সম্প্রতি একজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তিনি তার কবলা দলিল মূলে খরিদ করা ২ শতক জমির নামজারি করাতে গোলাকান্দাইল ভূমি অফিসে যান।নায়েব কামাল হোসেন তাকে নানা রকম ভুলভাল বুঝিয়ে দেড় লক্ষ টাকা দাবি করেন। পরে ১ লক্ষ টাকায় বিষয়টি রফা হয়।
এ বিষয়ে কামালের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি ফোনটি কেটে দেন হোয়াটসঅ্যাপে হতে বার্তা পাঠালে সেটির কোন জবাব দেননি
মন্তব্য করুন